লক্ষ্মীপুরে দাফনের চারদিন পর কবর থেকে সুমাইয়া আক্তার (২০) নামে এক গৃহবধূর মরদেহ উত্তোলন করা হয়েছে। সুমাইয়াকে হত্যার ঘটনা দামাচাপা দিতে স্ট্রোকের নাটক সাজিয়ে তড়িঘড়ি করে শশুর বাড়ির লোকজন কবর দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
এঘটনায় সুমাইয়ার মা বাদী হয়ে চন্দ্রগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। ৬ ফেব্রুয়ারি পুলিশ মামলার একমাত্র অভিযুক্ত সুমাইয়ার শশুর আমির হোসেনকে গ্রেপ্তার করে ।
বুধবার (১০ জানুয়ারি) দুপুরে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী সদর উপজেলার বশিকপুর ইউনিয়নের কাশিপুর গ্রামে শশুর বাড়ির পারিবারিক কবরস্থান থেকে সুমাইয়ার মরদেহ উত্তোলন করা হয়।
এসময় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট রিপা মনি দেবী, চন্দ্রগঞ্জ থানা পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) বেলায়েত হোসেন ও মামলার তদন্তকারী কর্মকমর্তা এসআই মজিবুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
মৃত সুমাইয়া সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ থানাধীন ৯নং উত্তর জয়পুর ইউনিয়নের উত্তর জয়পুর গ্রামের কিত্তিয়ার বাড়ীর মৃত আবু হোসেনের মেয়ে।
পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানায়, প্রায় ৩ বছর আগে বশিকপুর ইউনিয়নের কাশিপুর গ্রামের আমির হোসেনের ছেলে তুহিনের সঙ্গে সুমাইয়ার পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। তাদের সংসারে দেড় বছরের একটি মেয়ে রয়েছে। তুহিন ঢাকার একটি দোকানে সেলসম্যানের চাকরি করে। বিয়ের পর থেকেই শশুর আমির প্রায়ই সুমাইয়াকে পরিবারিক খুটিনাটি বিষয় নিয়ে বিভিন্ন ভাবে মানুািক ও শাররিক নির্যাতন করতো।
গত শুকুবার (৫ ফেব্রুয়ারী) রাতে বকাবকির একপর্যায়ে সুমাইয়াকে তার শশুর পিটিয়ে হত্যা করে। ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য স্ট্রোকের ঘটনা সাজিয়ে পরদিন ৬ ফেব্রুয়ারি সকালে শশুর বাড়ির লোকজন সুমাইয়ার মরদেহ তড়িঘড়ি করে কবর দিয়ে দেয়। কিন্তু দাফনের পর সুমাইয়ার মা কোহিনূর বেগম হত্যার অভিযোগ এনে শশুর আমিরের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ অভিযান চালিয়ে আমিরকে গ্রেপ্তার করে। পরে আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত লাশ উত্তোলন করে সুরতহাল ও ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়।
নিহতের মা কোহিনূর বেগম খুকি বলেন, আমার মেয়েকে হত্যার পর স্ট্রোকের নাটক সাজিয়ে শশুর বাড়ির লোকজন তড়িঘড়ি করে কবর দিয়ে দিয়েছে। তার শশুর আমির আমার মেয়েকে হত্যা করেছে। আমি মেয়ে হত্যার বিচার চাই।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও দত্তপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মজিবুর রহমান বলেন, ঘটনার পরপরই মামলার আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের উপস্থিতিতে কবর থেকে মরদেহ উত্তোলন করে ময়নাতদন্ত করা হয়েছে।
Leave a Reply