বিশেষ প্রতিনিধিঃ
লক্ষ্মীপুরে মাছ ব্যবসায়ীকে জিম্মি করে চাঁদাবাজির অভিযোগে সাবেক এক ছাত্রলীগ নেতাসহ ৫ জনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মঙ্গলবার (৩ আগষ্ট) বিকেলে আদালতের মাধ্যমে তাদের জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।
অভিযুক্তরা হলেন, পৌর এলাকার বাঞ্চানগর গ্রামের মৃত মঈন উদ্দিনের পুত্র মো. আনোয়ার হোসেন রতন (৩০), একই গ্রামের শাহ নেওয়াজের পুত্র সেবাব নেওয়াজ (৩০), নিতাই চন্দ্র দাসের পুত্র বাবুল চন্দ্র দাস (৫০), মনির সুফির ছেলে শাকিল সুফি (২৭) ও পার্বতীনগর ইউনিয়নের গোইয়ারপুর গ্রামের মৃত ইউসুফ হাসানের পুত্র নকিবুল হাসান (৩৮)।
এদের মধ্যে সেবাব নেওয়াজ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক উপ-দফতর সম্পাদক ছিলেন, ২০১৭ সালে ৩০ এপ্রিল তাকে বহিস্কার করা হয়। আনোয়ার হোসেন রতন ভূয়া সাংবাদিক পরিচয়দানকারী এবং নকিবুল ইসলাম জেলা মৎস্য অফিসের সিকিউরিটি গার্ড হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে তাদেরকে আটক করে সদর থানা পুলিশ। রাতেই তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে মাছ ব্যবসায়ী মো. ইসমাইল হোসেন খোকন।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জসীম উদ্দীন বলেন, আটককৃত ৫ জনসহ অজ্ঞাত আরও ৪/৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আটককৃতদের ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে জেলা কারাগারে প্রেরণ করা হয়।
ক্ষতিগ্রস্ত মাছ ব্যবসায়ী খোকন জানায়, কমলনগর মতিরহাট ও রামগতির মাছ ঘাট থেকে ইলিশ বোঝাই দু’টি পিকআপ ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার পিয়ারাপুর এলাকায় আসলে ৭/৮জনের একটি সঙ্গবদ্ধ দল নিজেদেরকে মৎস কর্মকর্তা ও সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে একটি পিকআপের গতিরোধ করেন। চালক ও সহকারীকের জিম্মি করে লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের বকুলতলা বেড়িবাঁধ এলাকায় নিয়ে যায় এবং বিভিন্ন হুমকি ধমকি দিয়ে তাদের থেকে মোটা অংকের চাঁদা দাবী করে। দর-কষাকষি পর বিকাশের মাধ্যমে তারা মাছ ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা আদায় করে নেয়। অপরদিকে ২য় গাড়িটি উত্তর তেমুহনী এলাকায় পৌঁছলে টাকার জন্য সেটিও জিম্মি করে তারা। এ ঘটনায় মাছ ব্যবসায়ী পুলিশকে অবগত করলে পুলিশ গিয়ে অভিযুক্তদের আটক করে।
সদর থানার উপ-পরিদর্শক মো. মহসিন জানান, মৎস্য কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে ইলিশ বোঝাই গাড়ি জিম্মি করে মারধর ও চাঁদা আদায়ের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তিনজন ও পরে অভিযান চালিয়ে আরও দুই জনকে আটক করে। তাদের বিরুদ্ধে সদর মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা নং জিআর-৪০৯/২০২১। আটককৃতদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়।
এ বিষয়ে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বেলাল উদ্দিন বলেন, অভিযুক্ত নকিবুল ইসলাম আমাদের নিয়োকৃত কর্মী নয়। সে একটি বেসরকারী সিকিউরিটি কম্পানীর সদস্য। ওই কম্পানীর মাধ্যমে তাকে আমাদের অফিসে সিকিউরিটি গার্ড হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply