নোয়াখালী প্রতিনিধি:
নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলায় মাটি ব্যবসা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে জাকির হোসেন (৪০) নামের যুবলীগের এক কর্মীকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৩ মে) দুপুরে উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের কোটবাড়িয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত জাকির হাসানপুর গ্রামের বাসিন্দা ও সোনাপুর ইউনিয়ন যুবলীগের কর্মী ছিলেন। তার বিরুদ্ধে সোনাইমুড়ী ও বেগমগঞ্জ থানায় ডাকাতি, ছিনতাই এবং নারী ও শিশু নির্যাতনসহ ১৩টি মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
স্থানীয়রা জানান, সরকার পরিবর্তনের পর জাকির হোসেন কিছুদিন তাবলিগ জামাতে কাটিয়ে ফিরে এসে এলাকায় মাটির ব্যবসা শুরু করেন। তিনি প্রতিটি ট্রাক মাটি ১,২০০ টাকায় বিক্রি করতেন, যেখানে একই এলাকার নজরুল, তুহিন ও সাদ্দামসহ অন্য ব্যবসায়ীরা প্রতি ট্রাক মাটি ১,৬০০ টাকায় বিক্রি করতেন। এতে দ্বন্দ্বের সূত্রপাত হয় এবং ব্যবসায়িক উত্তেজনা বাড়তে থাকে। দুই দিন আগে দুর্বৃত্তরা জাকিরের ভেকু মেশিনে আগুন ধরিয়ে দেয়। তারই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার দুপুরে তাকে কোটবাড়িয়া এলাকায় তুলে নিয়ে নির্মমভাবে মারধর করে হত্যা করা হয়।
বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে পাঁচজন ব্যক্তি একটি সিএনজি অটোরিকশায় করে জাকিরের মরদেহ বেগমগঞ্জ উপজেলার পোলোয়ান পোল এলাকায় ফেলে পালানোর চেষ্টা করলে স্থানীয়রা ধাওয়া দিয়ে দুজনকে ধরে গণপিটুনি দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ তাদের উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে এবং মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়।
নিহতের স্ত্রী ফাতিমা বেগম হিরা অভিযোগ করে বলেন, বিএনপির লোকজন আমার স্বামীকে অপহরণ করে হত্যা করেছে। স্থানীয়রা বাবু নামে এক বিএনপি কর্মীকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।
বিএনপির আহ্বায়ক মাহবুব আলমগীর আলো বলেন, বিএনপি কোনো সহিংসতা বা হত্যাকাণ্ডকে সমর্থন করে না। এটি রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অভিযোগ।
বেগমগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে। আটক দুজন বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোরশেদ আলম বলেন, নিহত জাকির একজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী ছিলেন। তার বিরুদ্ধে আমাদের থানায় ১১টি এবং বেগমগঞ্জ থানায় আরও কয়েকটি মামলা রয়েছে।
Leave a Reply