শিরোনাম:
পাঁচপাড়া আদর্শ সমাজ কল্যাণ পাঠাগার মিনিবার ফুটবল টুর্ণামেন্টের উদ্বোধন হানিফ মিয়াজীর বাজার ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির ত্রি-বার্ষিক নির্বাচন সম্পন্ন চন্দ্রগঞ্জে নিরাপদ সড়ক চাই উপলক্ষে বণার্ঢ্য র‌্যালী ও আলোচনা সভা চন্দ্রগঞ্জে “শহীদ জিয়া স্মৃতি সংসদের” নতুন কার্যালয় উদ্বোধন জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদলের মতবিনিময় সভা লক্ষ্মীপুরে সিলিন্ডার বিস্ফোরণে নিহত -৩, আহত ২০জন কফিল উদ্দিন বিশ্ববিদ্যাল কলেজ সভাপতির আগমন উপলক্ষে আনন্দ মিছিল লক্ষ্মীপুরের পাঁচপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে ফ্রী মেডিকেল ক্যাম্প অনুষ্ঠিত অপরাধ কমাতে সিসিটিভি ক‍্যামেরার ভূমিকা চন্দ্রগঞ্জ দলিল লেখক কল্যান সমিতির সভাপতি কাউছার, সম্পাদক মহিন

নোয়াখালীতে মেঘনায় প্রায় এক হাজার বর্গকিলোমিটার চর জেগে উঠেছে

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, জুন ১০, ২০১৯
  • 128 Time View

প্রতিদিনের খবর ডেস্ক :

নোয়াখালীর দক্ষিণঞ্চলীয় মেঘনায় নতুন নতুন চর জাগছে। ইতোমধ্যে জেগে উঠেছে প্রায় এক হাজার বর্গকিলোমিটার চরাঞ্চল। আগামী পাঁচ বছরে আরো বিশাল চর জেগে ওঠার উজ্জ্বল সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। প্রাপ্ত তথ্যমতে যে হারে চর জাগছে তাতে এই চরের আয়তন হবে কয়েকটি উপজেলার সমান। এতে এক দিকে দেশের হাজার হাজার নদীভাঙা অসহায় ভূমিহীন মানুষ চর আবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করতে পারবে। অন্য দিকে এসব চরে পরিকল্পিতভাবে চাষাবাদ, বৃক্ষরোপণ ও মৎস্য প্রকল্পসহ বাস্তবমুখী পদপে নেয়া হলে জাতীয় অর্থনৈতিক অগ্রগতির দ্বার উন্মোচিত হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। নোয়াখালী সদরে মূল ভূখণ্ড থেকে দক্ষিণ বিশাল বয়ারচর, পূর্ব ও পূর্ব-দক্ষিণ মাইলের পর মাইল ধূ-ধূ চর আর চর। নলের চরের দক্ষিণ -পূর্ব দিকে সন্দ্বীপের কাছাকাছি সাগরের বুক চিরে আরো অনেক চর জাগছে। সদরের চর কার্ক এবং পূর্ব পাশে সন্দ্বীপের উড়ির চরের সাথে জেলা সদরের ভূখণ্ডের দূরত্ব মাত্র আধা কিলোমিটার। এ ছাড়া চরমজিদ স্টিমার ঘাট থেকে ২৮ কিলোমিটার দূরত্বে হাতিয়া দ্বীপের মধ্যবর্তী নদী পথে অসংখ্য ডুবোচর সৃষ্টি হয়েছে, যা অচিরে মূল চরে রূপান্তরিত হবে। নলের চর থেকে চেয়ারম্যান ঘাট পর্যন্ত সাত-আট শত একর মেঘনায় নতুন চর জাগছে এবং এতে মানব বসতি ও বৃক্ষরোপণ শুরু হয়ে গেছে। জলদস্যু ও বনদ্যুরা প্রতি একর ভূমি ৩০-৪০ হাজার টাকা করে নিয়ে ভূমিহীনদের কাছে দখল বুঝিয়ে দিচ্ছে। হাতিয়া দ্বীপের উত্তর-পশ্চিমে জেগে ওঠা ৮ বর্গকিলোমিটার আয়তনের মৌলভীর চরে চাষাবাদ চলছে। এ ছাড়া আশপাশে অনেক নতুন চর জাগছে। এগুলোতে চাষাবাদ ও মানব বসতি চলছে পুরোদমে। হাতিয়ার তমরউদ্দিনের পশ্চিমে যে হারে চর জাগছে, তাতে করে আগামী দু-এক বছরের মধ্যে ভোলার মনপুরার সাথে হাতিয়া দ্বীপের মূল ভূখণ্ড মিশে গেলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। হাতিয়া দ্বীপের দক্ষিণ-পূর্ব প্রান্তে রহমত বাজারের পূর্বে ১৪-১৫ বর্গকিলোমিটার ডুবোচর আগামী ৮-১০ বছরের মধ্যে গৌচারণ ভূমিতে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ দিকে হাতিয়ার রহমত বাজারের বেড়িবাঁধ থেকে ২০ কিলোমিটার পশ্চিমে জাহাজমারা বাজার পর্যন্ত বেড়িবাঁধের বাইরে আবার বিশাল চর জেগে উঠেছে। তার মধ্যে অন্তত ১৫ কিলোমিটার বনবাগান ২০ বর্গকিলোমিটার মানব বসতি, ৩০ কিলোমিটার আবাদি জমি এবং ২৫ কিলোমিটার গৌচারণ ভূমি রয়েছে। এ ছাড়া দক্ষিণে প্রায় প্রতি বছর ২০-২৫ কিলোমিটার আয়তনের চর জাগছে। এ ছাড়া জাহাজমারা নিঝুম দ্বীপের পাশে অনেক চর জাগছে। এসব চরে মানব বসতি শুরু না হলেও কবিরার চরসহ এসব চরে বনবিভাগ বৃক্ষরোপণ করছে। অন্য দিকে নিঝুম দ্বীপ ছিল সাগরের মাঝখানে। কিন্তু নিঝুম দ্বীপের ১৫-২০ কিলোমিটার দক্ষিণে চর দিয়ে দূরে চলে যায় বঙ্গোপসাগর। শুধু তাই নয়, আরো দক্ষিণ গভীর সমুদ্রে মৎস্য শিকারি জেলেদের থেকে আরো চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। তারা জানান, মূল ভূখণ্ড থেকে দক্ষিণে চার-পাঁচ ঘণ্টা ট্রলারে যাওয়ার পর নদীর গভীরতা দুই থেকে আড়াই মিটারে এসে দাঁড়িয়েছে। অর্থাৎ হাতিয়া জাহাজমারা থেকে দক্ষিণে আরো ৪০-৫০ মাইল নদী পথের গভীরতা দু-তিন মিটার। নিঝুম দ্বীপের পশ্চিমে চর কমলা, বদনার চর, চর কালাম, দমার চরে মানব বসতি স্থাপন শুরু হয়নি জলদস্যু ও ভূমি দস্যুদের হাঙ্গামার ভয়ে। কিন্তু বনায়নের কাজ চলছে পুরো দমে। হাতিয়ার বাংলাবাজারের পূর্ব দিকে বিশাল চর জাগছে। জেলার মূল ভূখণ্ড চেয়ারম্যান ঘাট থেকে হাতিয়ার নলচিরা ঘাট রুটে বেশ কিছু ডুবোচর দেখা দিয়েছে।
সম্প্রতি বিদ্যমান নৌপথে অসংখ্য ডুবোচর দেখা দেয়ায় সে রুটে সি-ট্রাক চলাচল করতে পারছে না। এতে ঘুরে সি-ট্রাক যেতে হাতিয়ার নলচিরা ঘাটে ১ ঘণ্টা সময় বেশি লাগে। এ ছাড়া আগামী দু-এক বছরের মধ্যে সন্দ্বীপের চর ইসলামের সাথে মিশে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ছাড়া অনেক চরে মানব বসতির পাশাপাশি জমিন আবাদ হচ্ছে এবং অনেক চর বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির আওতায় আনা হচ্ছে। হাতিয়ায় যে হারে চর জাগছে এতে করে আগামী চার-পাঁচ বছরে এখানকার ভূমির পরিমাণ হবে কয়েকটি উপজেলার সমান। এ ছাড়া আরো অনেক ডুবোচর এখন ভেসে উঠছে। হাতিয়া নিঝুমদ্বীপ ও আশপাশে যে হারে চর জাগছে, তাতে এসব জায়গায় পরিকল্পিতভাবে বিভিন্ন এলাকার লাখ লাখ নদী ভাঙা অসহায় মানুষকে পুনর্বাসন এবং কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা যাবে।

হাতিয়া চরাঞ্চলের অধিবাসীরা জানান, জেগে ওঠা চরগুলোতে পলি মাটির কারণে ফসলে সার ও কীটনাশকের তেমন প্রয়োজন হয় না। শুধু তাই নয়, ফসলের তেমন পরিচর্চাও লাগে না। ভূমিহীনরা আরো জানান, তারা জলদস্যু ও বনদস্যুদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। তাদের কষ্টে অর্জিত ফসলের ওপর দস্যুবাহিনীকে চাঁদা দিতে হয়। হাতিয়া এলাকায় যে হারে চর জাগছে এবং মেঘনা নদী ও সাগরের পলি মাটির যে উর্বরতা তাতে এখানে ভেড়িবাঁধ নির্মাণ করে পরিকল্পিতভাবে কৃষি প্রকল্প নেয়া হলে এখানে যে ফসল হবে তা পুরো জেলায় খাদ্যের চাহিদা মিটিয়ে বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা সম্ভব হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহিদুর রহমানকে জেগে ওঠা চর আবাদে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা আছে কি না জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, চরগুলোর জরিপ চলছে। নিঝুমদ্বীপের দমার চরের জরিপ শেষ হয়েছে। সরকারিভাবে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি চলছে। চরগুলো ভূমিহীনদের লিজ দেয়া হচ্ছে।

এ ব্যাপারে হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূরে আলম চর জেগে উঠার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, নতুন চরগুলোতে জরিপের কাজ চলছে। পাশাপাশি বন বিভাগ বনায়নের কাজ করছে। জরিপের কাজ সমাপ্ত হলে সিন্ধান্ত নেয়া হবে এটা কি বনবিভাগের অধীনে থাকবে নাকি ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীনে যাবে। সুত্র:নয়াদিগন্ত

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Shares