প্রতিদিনের খবর ডেস্ক:
দেশব্যাপী আলোচিত বরগুনার রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডে দায়ের করা মামলার প্রধান অভিযুক্ত নয়ন বন্ড র্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন। এই সময় আহত হয়েছেন পুলিশের এএসপি সহ চারজন।
মঙ্গলবার (০২ জুলাই) সকালে পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মারুফ হোসেন এ কথা জানিয়েছেন। এর আগে ভোরে জেলা সদরের বুড়িরচর ইউনিয়নের পুরাকাটা এলাকায় এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে।
এসপি মারুফ হোসেন বলেন, এ ঘটনায় অভিযানে অংশগ্রহণকারী বরগুনা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. শাহজাহান হোসেন, বরগুনা সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. হাবিবুর রহমান, জেলা ডিবির এসআই (নি.) মো. মনিরুজ্জামান, কনস্টেবল মো হাবিবুর রহমান আহত হয়েছেন।
‘আহত পুলিশ সদস্য সদস্যদের বরগুনা পুলিশ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আর গুরুতর আহত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান হোসেনকে বরিশাল বিভাগীয় পুলিশ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’
তিনি জানান, বন্দুকযুদ্ধ শেষে ঘটনাস্থল থেকে তিনটি দেশীয় তৈরি ধারালো অস্ত্র, একটি বিদেশি পিস্তল ও ১ রাউন্ড পিস্তলের গুলি ও ২ রাউন্ড শটগানের কার্তুজের খালি খোসা উদ্ধার করা হয়েছে।
নিহত নয়ন বন্ড বরগুনা পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের পশ্চিম কলেজ রোড এলাকার মৃত মো. আবুক্কর সিদ্দিকের ছেলে এবং রিফাত শরীফ হত্যা মামলার এক নম্বর আসামি।
নয়ন বন্ডের বিরুদ্ধে আটটি মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এসব মামলায় নয়ন বন্ডকে অভিযুক্ত করে বিভিন্ন সময় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে পুলিশ। এসব মামলার মধ্যে দুইটি মাদক মামলা, একটি অস্ত্র মামলা এবং হত্যাচেষ্টাসহ পাঁচটি মারামারির মামলা রয়েছে।
এই হত্যাকাণ্ডে এখন পর্যন্ত দুই অভিযুক্ত আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। তারা হলেন, মামলার এজাহারভূক্ত ১১ নম্বর আসামি অলি ও ভিডিও ফুটেজ দেখে সনাক্ত করা অভিযুক্ত তানভীর। সোমবার বিকেলে বরগুনার সিনিয়র জুডিসিয়্যাল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম গাজীর কাছে স্বেচ্ছায় তারা এ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে আদালত তাদের জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেয়।
জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তার নাজমুল হাসানকে তিনদিনের রিমান্ড শেষে একই আদালতে হাজির করে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। আদালত তার আরো পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। সাগর ও সাইমুন নামের অপর দুইজনের জন্য পুলিশ পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে বিচারক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম গাজী তাদেরও পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন বলে নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বরগুনা সদর থানার ওসি তদন্ত হুমায়ুন কবির।
উল্লেখ্য, গত ২৬ জুন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে স্ত্রীর সামনে সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে রামদা দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে রিফাত শরীফকে। তার স্ত্রী আয়শা আক্তার মিন্নি হামলাকারী সাব্বির আহমেদ নয়ন (নয়ন বন্ড) ও রিফাত ফরাজীর সঙ্গে লড়াই করেও তাদের থামাতে পারেননি। গুরুতর আহত রিফাতকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে বিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
এ ঘটনায় নয়ন বন্ড, রিফাত ফরাজীসহ ১২জনের বিরুদ্ধে ২৭ জুন হত্যা মামলা দায়ের করেন রিফাত শরীফের বাবা মো. আ. হালিম দুলাল শরীফ।
Leave a Reply