বিশেষ প্রতিনিধি :
বেগমগঞ্জ উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ কারামতিয়া কামিল মাদ্রাসার এক ছাত্রকে বেত্রাঘাত করে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বেগমগঞ্জ উপজেলার আলাইয়ারপুর ইউনিয়নের জগদিশপুর গ্রামের রুদ্র বাড়ির আব্দুল মন্নানের ছেলে চন্দ্রগঞ্জ কারামতিয়া কামিল মাদ্রাসার আলিম ২য় বর্ষের ছাত্র মো. আকবর হোসেন (১৮)কে বেদম পিটিয়ে অহত করেছে অত্র মাদ্রাসার শিক্ষক শিহাব উদ্দিন।
খবর পেয়ে ওই ছাত্রের পরিবারের সদস্যরা আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে বেগমগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
নির্যাতিত ছাত্র আকবর হোসেন জানান, মাদ্রাসায় মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার সময় রাত্রি কালিন কোচিং করার সময় আমার চোখে ঘুমের ভাব আসে। সেই সময় সিহাব হুজর আমাকে জোড়া বেত দিয়ে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে আমার শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত জখম করে।
নির্যাতনের শিকার মাদ্রাসা ছাত্রের বড় ভাই মো. দিদার হোসেন অভিযুক্ত শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবী জানিয়ে বেগমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও বেগমগঞ্জ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেন।
অভিযোগকারি বলেন, উক্ত মাদ্রাসায় রাত্রী কালিন ক্লাসের নামে ছাত্র-ছাত্রীরদের কাছ থেকে কোচিং ফি বাবদ ৪০০ টাকা করে আদায় করছে মাদ্রাসা অধ্যক্ষ। তিনি বলেন, যেখানে সরকার ভাবে কোচিং নিষিদ্ধ। যেখানে এই মাদ্রাসার কোচিং বাণিজ্য করে হাজার হাজার টাকা আদায় করছে ছাত্র-ছাত্রীরদের কাছ থেকে। তিনি আরো বলেন, কোচিং শেষে রাত ১০টায় বাড়ি ফেরার পথে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা না থাকায় আমরা অভিভাবকরা শঙ্কিত। রাতে কোচিং না করতে সম্মত নাহলে টিসি নিয়ে মাদ্রাসা ত্যাগ করার কথা বলেন অধ্যক্ষ।
অভিযোগের রিষয়ে অধ্যক্ষ এ এইচ এম আব্দুল হাইয়ের সাথে মুঠোফোনে জানতে চাওয়া হলে তিনি রাত দশটা পর্যন্ত কোচিং করানো এবং ৪০০ টাকা ফি আদায় করার কথা স্বীকার করেন এবং আকবর নামে এক ছাত্রকে মারধর করার বিষয় শুনেছেন। কিন্তু এব্যাপারে কোন অভিযোগ পাননি বলে তিনি জানান।
বেগমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহাবুব আলম বলেন, মাদ্রাসার শিক্ষার্থীর বড় ভাই লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বেগমগঞ্জ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ হারুনুর রশিদ চৌধুরী অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত পূর্বক যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাস দেন।
উল্লেখ্য, সরকারী নীতিমালা “শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের কোচিং বাণিজ্য বন্ধ নীতিমালা-২০১২” (ক) আগ্রহী শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নির্ধারিত সময়ের পূর্বে বা পরে শুধুমাত্র অভিভাবকদের আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রতিষ্ঠান প্রধান অতিরিক্ত ক্লাসের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবেন । এ ক্ষেত্রে প্রতি বিষয়ে মেট্টোপলিটন শহরে মাসিক সর্বোচ্চ ৩০০/-(তিনশত) টাকা, জেলা শহরে ২০০/-(দুইশত) টাকা এবং উপজেলা বা স্থানীয় পর্যায়ে ১৫০/- (একশত পঞ্চাশ) টাকা রশিদের মাধ্যমে অতিরিক্ত সময় ক্লাস পরিচালনার জন্য আগ্রহী শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে ফি আকারে গ্রহণ করা যাবে। দরিদ্র শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠান প্রধান স্ববিবেচনায় এ হার কমাতে/মওকফ করতে পারবেন। একটি বিষয়ে মাসে সর্বনিম্ন ১২ (বার) টি ক্লাস অনুষ্ঠিত হতে হবে এবং এক্ষেত্রে প্রতিটি ক্লাসে সর্বোচ্চ ৪০ (চল্লিশ) জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করতে পারবে।
Leave a Reply