প্রতিদিনের খবর ডেস্ক :
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের একলাশপুরে স্বামীকে বেঁধে রেখে গৃহবধূকে নিজঘরে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনার ৩৩ দিন পর নয়জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। রোববার দিবাগত রাত ১টার দিকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে নির্যাতিতা ওই গৃহবধূ (৩৫) বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন।
এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত র্যাব ও পুলিশ কয়েক দফা সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে বিভিন্নস্থান থেকে চারজনকে গ্রেপ্তার করে।
রোববার বিকেলে একলাশপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের জয়কৃষ্ণপুর গ্রামের খালপাড় এলাকার হারিদন ভূঁইয়া বাড়ির শেখ আহম্মদ দুলালের ছেলে মো. আব্দুর রহিম (২০) এবং অপর আরেক আসামি একই এলাকার মোহর আলী মুন্সি বাড়ির মৃত আব্দুর রহিমের ছেলে মো. রহমত উল্যাহ (৪১) গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হারুন উর রশীদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে র্যাব-১১ এর অপর অভিযানে রাত আড়াইটায় নারায়ণগঞ্জের চিটাগাং রোড থেকে দেলোয়ারকে অস্ত্রসহ এবং রাত ৩টায় ঢাকার কামরাঙ্গীরচর এলাকা থেকে মামলার প্রধান আসামি বাদলকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-১১।
র্যাব এর আইন গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্ণেল আশিক বিল্লাহ জানান, বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে তাদের দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
জানা যায়, পুলিশের ৫টি ইউনিট ৭ ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে ওই দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করে। অপরদিকে, ঘটনার পর ভয়ে বাড়িছাড়া নির্যাতিতা গৃহবধূকে সদর উপজেলার মাস্টার পাড়ার তার এক আত্মীয়ের বাসা থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ২ সেপ্টেম্বর রাত ৯টার দিকে উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের খালপাড় এলাকার নূর ইসলাম মিয়ার বাড়িতে গৃহবধূর বসতঘরে ঢুকে তার স্বামীকে পাশের কক্ষে বেঁধে রাখে স্থানীয় বাদল ও তার সহযোগীরা। এরপর গৃহবধূকে ধর্ষণের চেষ্টা করে তারা। এ সময় গৃহবধূ বাধা দিলে তারা বিবস্ত্র করে বেধড়ক মারধর করে মোবাইলে ভিডিও চিত্র ধারণ করেন।
ওসি মো. হারুন উর রশীদ জানান, পুলিশ অভিযুক্ত অপর আসামিদের গ্রেপ্তারে জোর তৎপরতা চালাচ্ছে। গ্রেপ্তার আসামিদের বিচারিক আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হবে।
ভুক্তভোগী গৃহবধূর বাবা জানান, আমি নিরীহ লোক। সন্ত্রাসীদের ভয়ে কোনো কথা বলার সাহস পাই না। আমি শুধু আল্লাহর কাছে বিচার চাই।
এ জঘন্য ঘটনার সাথে জড়িতদের রাতের মধ্যে গ্রেপ্তারের দাবি জানান, একলাশপুর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ফিরোজ আলম ভুঁইয়া।
নোয়াখালী পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন জানান, গৃহবধূকে নির্যাতনের ঘটনায় জড়িত কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে এবং নির্যাতিতা পরিবারকে আইনি সহযোগিতা দিতে জেলা পুলিশের ৫টি ইউনিট মাঠে কাজ করছে।
Leave a Reply