চৌমুহনী শহরসহ বেগমগঞ্জ উপজেলায় শতাধিক ছোট বড় সরকারি পুকুর রয়েছে। তম্মধ্যে চৌমুহনী শহরেই ২০টি পুকুর রয়েছে। পুকুরগুলি জবরদখলকারিদের কবলে অস্তিত্ব হারাতে বসেছে চৌমুহনী শহরে অগ্নিকান্ড ঘটলে পানির অভাবে অগ্নি নির্বাপক দলের লোকদের পানির জন্য এদিক সেদিক ছুটতে হয়।
বেগমগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার [ভূমি] অফিস সূত্রে জানা যায়, বেগমগঞ্জ উপজেলার ১৬ টি ইউনিয়ন ও চৌমুহনী পৌর এলাকায় শতাধিক বড় ছোট সরকারি পুকুর রয়েছে। তম্মধ্যে ২০টি পুকুর রয়েছে চৌমুহনীতে।
স্থানীয়ভাবে পর্যবেক্ষনে দেখা যায়, চৌমুহনী পৌর এলাকার বড় মসজিদ সংলগ্ন পুকুর, সিনেমা হল ও রাম ঠাকুর আশ্রম সংলগ্ন পুকুর, করিমপুর, আলীপুর কুরী পাড়ায় একাধিক পুকুর সমানতালে ভরাট করে দোকানপাট এমনকি বহুতল ভবন নির্মান হচ্ছে। কেউ কেউ এক বছরের জন্য কিছু অংশ বন্দোবস্ত এনে বহুতল ভবন নির্মান করছে সহজভাবে। কোন কোন স্থানে পুকুরের অস্তিত্বই বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়া বেগমগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অবস্থিত সরকারি পুকুরগুলির অবস্থা সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কেউ তেমন খবর রাখে না। কেবলমাত্র বছর শেষে ২০/২৫ টি পুকুরে মাছ চাষের জন্য উপজেলা প্রশাসন ইজারা দিয়ে থাকে। এছাড়া উপজেলার অর্ধশতাধিক সরকারি পুকুর হাজামজা অবস্থায় রয়েছে। এ পুকুরগুলো পুনখনন করে বহুমুখী প্রকল্প গ্রহন করলে সরকারি রাজস্ব বৃদ্ধি পাবে।
চৌমুহনী সাধারন ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি হুমায়ুন কবীর ও সাধারন সম্পাদক আবুল খায়ের এবং ব্যবসায়ী তুহিন, সাহাবুদ্দিন, আবদুল হক, মির্জা মোহাম্মদ মহিউদ্দিন জানান শহরে অবস্থিত পুকুরগুলো কয়েক বছর আগেও মানুষ গোসল করত, নানভাবে ব্যবহার করত, এমনকি চৌমহনী শহরের কোথায়ও অগ্নিকান্ড ঘটলে অগ্নি নির্বাপক দল এসে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পারত। কিন্তু বর্তমানে অগ্নিকান্ডের সময় অগ্নি নির্বাপক দল এসে পানি খুজতে খুজতে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান বেড়ে যায়। চৌমুহনী স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর আলম, আবুল কালাম আজাদ জানান, পুকুরগুলো দখলমুক্ত করে পুনখনন করে পানির উৎস সৃষ্টি করলে মানুষের জীবনযাত্রার উন্নয়ন ও পরিবেশের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পাবে।
চৌমুহনী পৌর ভূমি অফিসের উপসহকারী ভূমি কর্মকর্তা বোরহান উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট প্রতিবেদন পেশ করা হয়েছে। কিভাবে পুকুরের অংশ বিশেষ এক বছরের জন্য বন্দোবস্ত দেওয়া হয়েছে [যাতে বহুতল ভবন নির্মান হচ্ছে] জানতে চাইলে তিনি একসনা বন্দোবস্তকৃত কৃষিজ পণ্য উৎপাদন ছাড়া কোন ভবন করতে পারবেনা। যদি করা হয় তাহলে বন্দোবস্ত বাতিল ও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার মোহাম্মদ মোস্তফা কামালের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, চৌমুহনী শহর ও বেগমগঞ্জ উপজেলার সরকারি পুকুরগুলি সম্পর্কে বিস্তারিত জানা নেই।তবে জলাশয় হলেও শুধুমাত্র ভূমিহীনদেরকে বন্দোবস্ত দেওয়ার একটা বিধান রয়েছে।
বেগমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামছুন নাহারের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, জলাশয় ভরাট করা অপরাধ, তার ওপর সরকারি জলাশয় ভরাট করে বা কিয়দাংশ বন্দোবস্ত এনে পাকা ভবন করা যায় না। চৌমুহনী শহর সহ বেগমগঞ্জের সরকারি পুকুরগুলোর অবস্থা সম্পর্কে জেনে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply