প্রতিদিনের খবর ডেস্ক :
দলকে না জানিয়ে ঠাকুরগাঁও-৩ (রানীশংকৈল) আসনে বিএনপির সংসদ সদস্য জাহিদুর রহমান শপথ নিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বেলা ১২টায় স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী জাতীয় সংসদ ভবনে তার দপ্তরে জাহিদুর রহমানকে শপথবাক্য পাঠ করান। শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সংসদ সচিব জাফর আহমেদ খান।
বিএনপির চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, ‘জাহিদুর রহমান শপথের বিষয়ে দল কিছু জানে না। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছেন। কিন্তু তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না।’
সংসদ সচিবালয় জানিয়েছে, একাদশ সংসদ নির্বাচনে জয়ী ৩০০ প্রার্থীর মধ্যে জাহিদকে নিয়ে মোট ২৯৫ জন এ পর্যন্ত শপথ নিয়েছেন।
দলের নির্ভরযোগ্য সূত্র মতে, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছাড়া দলের নির্বাচিত পাঁচ সংসদ সদস্য আগামী ৩০ এপ্রিলের আগে যে কোনো দিন শপথ নেবেন। দলের হাইকমান্ডের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও নির্বাচিত এমপিদের দাবি- তারা তারেক রহমান ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের গ্রিন সিগন্যালেই সংসদে যাবেন।
তবে এ পাঁচজন যদি স্থায়ী কমিটির সিনিয়রদের পরামর্শ ও সিদ্ধান্ত তোয়াক্কা না করে গোপন সিদ্ধান্তে সংসদে যান, তাহলে বড় ধরনের দল ত্যাগের সম্ভাবনাও রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, শপথ নিয়ে নির্বাচিতদের সঙ্গে ফখরুলের নেতৃত্বে তারেক রহমানের দীর্ঘ সময় আলাদা কথা হয়েছে। নির্বাচিতদের কথা তারেক জিয়া শুনেছেন, আর তারেক জিয়াও তাদের নানা পরামর্শ দিয়েছেন। তারা জানিয়েছেন, যাদের ভোটে বিএনপি আসনগুলো পেয়েছে, সেই ভোটারদের শ্রদ্ধা জানিয়ে সংসদে গিয়ে প্রতিবাদ করা উচিত।
আর তাদের ওপরও চাপ রয়েছে নিজ নিজ আসনের মানুষের। এলাকাবাসী চাইছেন, তারা সংসদে গিয়ে তুলে ধরুক এলাকার সমস্যা-সঙ্কটের চিত্র। দলের কারাবন্দি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতেও সংসদে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ জানাতেন চান বিএনপির নির্বাচিতরা।
যদিও নির্বাচনের আগের রাতে সিল মেরে ব্যালট বাক্স ভরে রাখার অভিযোগ এনে ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছিল বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দল ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। এখন ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে শপথ না নিলে তাদের সদস্যপদ খারিজ হয়ে যাবে সাংবিধানিকভাবে; সে নিয়মও তাদের ভাবতে হচ্ছে।
সে ডেটলাইন আগামী ৩০ এপ্রিল। তাই এরই মধ্যে বিএনপির নির্বাচিতরা মির্জা ফখরুল ব্যতীত অন্যরা শপথের ইঙ্গিত পেয়েছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি। এখন তারা যে কোনো দিন শপথ নিতে পারেন। এ পাঁচজন শপথ নিলে আগামী আড়াই মাসের মধ্যে খালেদা জিয়াকে জামিনেরও একটা ইঙ্গিত থাকবে বলে মনে করছেন বিএনপির বড় একটি অংশ।
জানা যায়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়ে বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচিত এমপিরা শপথ না নেয়ার কথা জানান। পরবর্তীতে ড. কামালের অনুসারী গণফোরামের দুজন শপথ নেন। এরপরই বিএনপি থেকে নির্বাচিত দলীয় মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর (বগুড়া-১), মো. জাহিদুর রহমান (ঠাকুরগাঁও-৫), মোশাররফ হোসেন (বগুড়া-৪), উকিল আবদুস সাত্তার (ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২), হারুনুর রশিদ (চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২) এবং মো. আমিনুল ইসলাম (চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩) শপথ নিতে পারেন বলে দলীয় ফোরাম থেকেই গুঞ্জন শুরু হয়। দলের শীর্ষ নেতারাও এ নিয়ে প্রকাশ্যে বক্তব্য দেন।
Leave a Reply