প্রতিদিনের খবর ডেস্কঃ
আগামীকাল সোমবার থেকে গণপরিবহন বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। আজ রোববার নিয়মিত ব্রিফিংয়ে মন্ত্রী এ কথা জানান। ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, গণপরিবহন আগামীকাল থেকে বন্ধ থাকবে।
তবে পণ্য পরিবহন, জরুরি সেবা, জ্বালানি-ওষুধ-পচনশীল-ত্রাণবাহী পরিবহন, সংবাদপত্র, গার্মেন্টসসামগ্রী এই নিষেধাজ্ঞার আওতামুক্ত থাকবে বলে জানান ওবায়দুল কাদের।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও মৃত্যু আশঙ্কাজনকভাবে বাড়তে থাকায় পরিস্থিতি সামাল দিতে সারা দেশ লকডাউন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আগামীকাল থেকে আপাতত সাত দিনের জন্য লকডাউন (অবরুদ্ধ অবস্থা) শুরু হবে।
দেশে লকডাউন দেওয়া হবে কি না, এ নিয়ে কয়েক দিন ধরেই মানুষের মধ্যে আলোচনা চলছিল। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে চূড়ান্ত ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছিলেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরাও। এমন পরিস্থিতিতে গতকাল শনিবার দুপুরের আগে অনেকটা আকস্মিকভাবে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এক ভিডিও বার্তায় বলেন, করোনার সংক্রমণ দ্রুত ছড়াচ্ছে। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার। বিরাজমান পরিস্থিতিতে সরকার সোমবার থেকে এক সপ্তাহ সারা বাংলাদেশে লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার সরকার গঠিত কোভিড-১৯–বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি সামাজিক অনুষ্ঠান, বিনোদনকেন্দ্র বন্ধ করাসহ বিভিন্ন বিধিনিষেধ আরোপের সুপারিশ করেছিল। আর সংক্রমণ মোকাবিলায় গত ২৯ মার্চ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ১৮ দফা নির্দেশনা দিয়েছিল। এর মধ্যে রয়েছে অর্ধেক জনবল দিয়ে অফিস পরিচালনা করা, জনসমাগম সীমিত করা, গণপরিবহনে ধারণক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী পরিবহন করা ইত্যাদি। এসব নির্দেশনা ঠিকমতো কার্যকরে যাওয়ার আগেই লকডাউনের পথে গেল সরকার।
লকডাউনে শুধু জরুরি সেবা দেয় এমন প্রতিষ্ঠান, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দোকান এবং পণ্যবাহী যানবাহন ও শিল্পকারখানা খোলা থাকবে। বন্ধ থাকবে গণপরিবহন, যাত্রীবাহী ট্রেন, যাত্রীবাহী নৌযান। অভ্যন্তরীণ পথে বিমান চলাচলও বন্ধ থাকবে। আর যেসব অফিস চালু রাখার প্রয়োজন রয়েছে, তাদের সীমিত জনবল নিয়ে চালাতে হবে। খুব জরুরি প্রয়োজন ছাড়া লকডাউনে ঘর থেকে বের হওয়া যাবে না।
গত বছরের ৮ মার্চ দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্তের তথ্য জানায় সরকার। এরপর সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে ২৩ মার্চ প্রথমবার সাধারণ ছুটির ঘোষণা দিয়েছিল সরকার। শুরুতে ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি দেওয়া হলেও পরে ছুটির মেয়াদ কয়েক দফা বাড়ানো হয়। সব মিলিয়ে ওই বছরের ২৬ মার্চ থেকে ৩০ মে পর্যন্ত দেশজুড়ে ৬৬ দিন সাধারণ ছুটি ছিল।
ওই সময় সব অফিস-আদালত, কলকারখানা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে সারা দেশে সব ধরনের যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। ছুটির মধ্যে সবকিছু বন্ধ থাকার সেই পরিস্থিতি লকডাউন হিসেবে পরিচিতি পায়। তবে সরকার তখন আনুষ্ঠানিকভাবে ‘লকডাউন’ শব্দটি ব্যবহার করেনি। সাধারণ ছুটির পাশাপাশি তখন এলাকাভিত্তিক লকডাউনের অংশ হিসেবে দুই থেকে তিন সপ্তাহ অবরুদ্ধ রাখা হয়েছিল ঢাকার টোলারবাগ, রাজাবাজার ও ওয়ারী এলাকা। ৬৬ দিন বন্ধের পর গত বছরের ৩১ মে সরকারি-বেসরকারি অফিস খুলে দেওয়া হয়। কিন্তু এবার কঠোরভাবে লকডাউন কার্যকর করার কথা বলছে সরকার। সুত্র: প্রথমআলো।
Leave a Reply