বিশেষ প্রতিনিধি:
লক্ষ্মীপুরে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতির উপর হামলা ও গাঁড়ি ভাঙচুরের ঘটনার মামলায় ৩৩ আসামীকে জেলহাজতে পাঠিয়েছেন আদালত। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট চন্দ্রগঞ্জ ও কমলনগর আমলী আদালতের বিচারক জুয়েল দেব এ আদেশ দেন। দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর আসামীরা আদালতে আত্মসম্পণ করলে জামিন নামঞ্জর করে জেলহাজতে পাঠানো হয়। তবে পলাতক রয়েছে মামলার প্রধান দুই আসামী আ’লীগ নেতা ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ফয়সাল আহমেদ রতন ও কমলনগর উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক মেজবাহ উদ্দিন বাপ্পী।
মামলা ও আদালত সূত্রে জানা যায়, গত ২১ জুন (সোমবার) দুপুরে ইউপি নির্বাচন চলাকালে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মিয়া মো. গোলাম ফারুক পিংকু সাংগঠনিক কাজে রামগতি উপজেলার আলেকজান্ডারের দিকে গাড়িবহরযোগে যাচ্ছিলেন। পথে কমলনগরের তোরাবগঞ্জ বাজারে পৌঁছলে তোরাবগঞ্জ সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ফয়সাল আহমেদ রতন ও কমলনগর উপজেলা চেয়ারম্যান মেজবাহ উদ্দিন বাপ্পীর নেতৃত্বে আসামিরা পরিকল্পিতভাবে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। এসময় আ’লীগ নেতা পিংকু গাড়ি থেকে নামতেই হত্যার উদ্দেশ্যে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়। হামলায় পিংকুসহ অন্তত আওয়ামী লীগের ১০ নেতাকর্মী আহত হন। এসময় আ.লীগ নেতা পিংকুর ব্যাক্তিগত গাড়ি ভাঙচুর করে প্রায় ১০ লক্ষ টাকার ক্ষতি সাধন করা হয়। এঘটনায় পরে ২৩ জুন (বুধবার) তোরাবগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান ফয়সাল আহমেদ রতন ও কমলনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মেজবাহ উদ্দিন বাপ্পিসহ ৫৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ১৮০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে আ’লীগ সভাপতির গাড়ি চালক মো. নিজাম উদ্দিন। ওই দিনই তোরাবগঞ্জের ইউপি সদস্য (মেম্বার) ইসমাইল হোসেন, মো. শরিফ, আবদুল মতিন ও মো. সবুজ নামে মামলায় চার আসামীকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর মামলার অপর ৩২ আসামী আজ আদালতে আত্মসম্পন করে। একই সময় পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে আমিন উল্যাহ নামে এক আসামীকে আদালতে হাজির করে। আদালত এ মামলায় উপস্থিত ৩৩ আসামীর জামিন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠায়।
আত্মসম্পণকৃত আসামীরা হলেন, রাকিবুল হাসান বিপ্লব, গিয়াস উদ্দিন রুবেল আবদুল কাদের, আবদুল লতিফ মন্টু, শাহাদাত হোসেন, আলাউদ্দিন, নিজাম উদ্দিন কসাই, নুরুল আমিন, আবুল কালাম, আবদুল মালেক, খোকন, আবদুল আলিম, জসিম, সবুজ, বাবুল, মো. শাহজাহান, মো. মাকছুদ, মো. শাহজাহান, মো. রুবেল, আবদুল বাতেন ভূঁইয়া, আবু জাফর ভূঁইয়া, সাইফুল ইসলাম, মো, হারুন, মোসলে উদ্দিন, রুবেল, মো. আজগর, মিরাজ হোসেন, আবদুল মতিন, নুরুল আমিন, কামাল উদ্দিন, জয়নাল আবেদীন, হেলাল উদ্দিন ও পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়া আসামী আমিন উল্যাহ। তারা সবাই কমলনগর ও সদর উপজেলার বাসিন্দা বলে জানা যায়।
বাদী পক্ষের আইনজীবী এ্যাডভোকেট রাসেল মাহমুদ মান্না বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এখনো মামলার প্রধান দুই আসামী পলাতক রয়েছে।
এদিকে আসামী পক্ষের আইনজীবী এ্যাডভোকেট শামছুল আলম অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, মামলায় আত্মসম্পনকৃত বিবাদীরা ঘটনার সাথে জড়িত নয়। তাদের জামিনের জন্য উচ্চ আদালতে আবেদন করা হবে।
Leave a Reply