বিশেষ প্রতিনিধি:
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জে দুই ছাত্রলীগ নেতার উপর হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে। রবিবার (১৬ জানুয়ারি) বিকেলে স্থানীয় দুই পক্ষ পাল্টা পাল্টি বিক্ষোভ করেছে৷ এ সময় চন্দ্রগঞ্জ বাজারে থমথমে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। পুলিশি হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
স্থানীয়রা জানায়, শনিবার (১৫ জানুয়ারি) রাতে চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক কাজী মামুনুর রশিদ বাবলু ও চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম জিকোর ওপর হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র ছাত্রলীগ প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করে। হামলার ঘটনার জন্য চন্দ্রগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আমিনকে দায়ী করা হয়।
এদিকে ঘটনাটিকে সাজানো দাবি করে চেয়ারম্যান নুরুল আমিনের পক্ষ পাল্টা সমাবেশের ডাক দেয়। তবে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন পক্ষকে সমাবেশ করার অনুমোদন দেওয়া হয়নি। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বিকেলে দুই পক্ষ পাল্টাপাল্টি সমাবেশ পালন করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, কাজী বাবলুর উপর হামলার প্রতিবাদে রবিবার বিকেলে সাড়ে ৪ টার দিকে কফিল উদ্দিন ডিগ্রি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি এম মাসুদের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের একাংশ চন্দ্রগঞ্জ বাজারে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। এ সময় তারা দলীয় স্লোগান দেয়। এছাড়া ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ তুলে ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আমিনের বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ করে তারা। পরে চন্দ্রগঞ্জ নিউ মার্কেটের সামনে অবস্থান নিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ করে।
এ সময় উপস্থিতি ছিলেন, ১৪দলীয় জোটের চন্দ্রগঞ্জ থানা শাখার আহ্বায়ক ও সাবেক চেয়ারম্যান এম ছাবির আহম্মেদ, চন্দ্রগঞ্জ থানা কৃষকলীগের সভাপতি জাকির হোসেন জাহাঙ্গীর, চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি জয়নাল আবেদিন, সাধারণ সম্পাদক কাজী সোলায়মান, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. খলিলুর রহমান, আওয়ামীলীগ নেতা গৌতম মজুমদার, আবুল কাশেম
আব্দুল হালিম, কফিল উদ্দিন ডিগ্রী কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি এম মাসুদুর রহমান, ছাত্রলীগ নেতা শাহপরান শাকিল, অনিক রহমান, নাদিম মাহমুদ অন্তর, হৃদয় পাঠওয়ারী, এম সজিবসহ আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, কৃষকলীগ, ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ।
অন্যদিকে বিকেল পৌনে ৫টার দিকে হামলার ঘটনাকে সাজানো দাবি করে পাল্টা সমাবেশ করে চেয়ারম্যান নুরুল আমিনের অনুসারীরা। চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গিয়াস উদ্দিন লিটন, সাংগঠনিক সম্পাদক শিপন খলিফা, যুবলীগের আহ্বায়ক সাহাব উদ্দিন, যুগ্ম আহবায়ক আবদুর রাজ্জাক রিংকু, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা রিয়াজ হোসেন জয় এবং স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি তাজুল ইসলাম ভূঁইয়ার নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিলটি ইউপি কার্যালয় থেকে বের হয়ে বাজার সড়ক হয়ে নিউ মার্কেট এলাকায় আসলে মুখোমুখি অবস্থানে পড়ে উভয় পক্ষ। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে উত্তপ্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। মাঝখানে পুলিশ অবস্থান নিয়ে তাদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করে। এ সময় বাজারের ব্যবসায়ী এবং জনসাধারণের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তবে পুলিশি হস্তক্ষেপে কোন ধরণের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেনি।
চন্দ্রগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একে ফজলুল হক বলেন, দুই পক্ষই পাল্টাপাল্টি প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে। অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে পুলিশ সতর্ক অবস্থানে ছিলো।
উল্লেখ্য, শনিবার (১৫ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ৯টার দিকে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা কাজী মামুনুর রশিদ বাবলু ও সাইফুল ইসলাম জিকোর ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। থানায় গিয়ে নিজেদের নিরাপত্তা চেয়ে সেখান থেকে বের হয়ে চন্দ্রগঞ্জ বাজারের দিকে আসার পথে সমতা সিনেমা হলের সামনে এ হামলার শিকার হয়। তাদের জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
হামলার ঘটনায় চন্দ্রগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আমিনকে দায়ি করা হয়। চেয়ারম্যান এ ঘটনাকে সাজানো ঘটনা হিসেবে দাবি করেছেন।
Leave a Reply