শিরোনাম:
চন্দ্রগঞ্জ বাজার পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা মাঈন উদ্দিন হামীম স্মৃতি ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা ও পুরস্কার বিতরণ চন্দ্রগঞ্জ আইডিয়াল একাডেমিতে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও সুমাইয়া মেমোরিয়াল স্মৃতি বৃত্তি প্রদান লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জে অনুষ্ঠিত হলো শাহআলম চৌধুরী স্মৃতি বৃত্তি পরীক্ষা চন্দ্রগঞ্জে মেধা বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত আলোচনায় ফজলুর রহমান বাবু ও বীনা আক্তারের “তুমি আমার মনের মানুষ” বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব তোফায়েল আহম্মদের মৃত্যুতে সৌদি প্রবাসী বিএনপির দোয়া ও আলোচনা সভা লক্ষ্মীপুরে বীর মুক্তিযোদ্ধা তোফায়েল আহম্মদ পাঠাগার উদ্ধোধন বীর মুক্তিযোদ্ধা তোফায়েল আহম্মেদের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া জিয়া সৈনিকদলের পূর্নাঙ্গ কেন্দ্রীয় কমিটি আনুষ্ঠানিক ঘোষণা

কালকে সহপাঠীরা বসবে পরীক্ষার টেবিলে, জান্নাত থাকবে ঘরবন্দী

Reporter Name
  • Update Time : শনিবার, নভেম্বর ১৬, ২০১৯
  • 255 Time View

 

প্রতিদিনের খবর ডেস্ক :

নোয়াখালী বেগমগঞ্জ মাদ্রাসার কমিটি নিয়ে বিরোধের জেরে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে চতুর্থ শ্রেণির এক ছাত্রীকে উত্তীর্ণ না করার অভিযোগ।
আর দশটি শিশুর মতোই চঞ্চল ছিল নুরে জান্নত। নিয়মিত স্কুলে যাওয়া, পড়া লেখার পাশাপাশি সহপাঠীদের সঙ্গে খেলাধুলা, হইহুল্লোড়ে কাটাত দিন। সেই সতেজ মেয়েটিই এখন কারও সঙ্গে কথা বলে না। খেলতে চা না। সারা দিন নীরব হয়ে বাড়িতে এখানে-ওখানে বসে থাকে। আর কয় দিন পর সহপাঠীরা পঞ্চম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষা পারলেও পারবেনা শুধু সে।
নোয়াখালীল বেগমগঞ্জ উপজেলার আলাইয়াপুর ইউনিয়নের ভবভদ্রী গ্রামের নুর হোসেনের মেয়ে নুরে জান্নাত। ২০১৮ সালে চন্দ্রগঞ্জ কারামতিয়া কামিল মাদ্রাসার চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী ছিল সে। ওই বছরের ২৮ মার্চ তাঁর বাবা নুর হোসেন মাদ্রাসার ব্যবস্থাপনা কমিটির নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় বিজীয় হন। বাবার বিজয় শেষ পর্যন্ত কাল হয়েছে মেয়ের জীবনে। নুরে জান্নাতের বাবা নুর হোসেনের অভিযোগ, নির্বাচিত কমিটি নিয়ে বিরোধের জের ধরে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এ এইচ এম আবদুল হাই তাঁর মেয়েকে ২০১৮ সালের বার্ষিক পরীক্ষায় পাঁচ বিষয়ে অকৃতকার্য দেখিয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ দেখাতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এরপর তিনি তাঁর ভাতিজাকে পাঠিয়ে চতুর্থ শ্রেণিতে পুনঃভর্তি অনুরোধ করলে তাও রক্ষা করা হয়নি। উল্টো অধ্যক্ষ শিশুকে নানা ভয়ভীতি দেখিয়ে তাড়িয়ে দেন।
নুর হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে তিনি বাধ্য হয়ে চলতি বছরের ১৭ ও ২৪ এপ্রিল জেলা প্রশাসকের বরাবরের পৃথক দুটি লিখিত অভিযোগ করেন । এতে পঞ্চম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ ও পুনঃভর্তি না করা এবং অবৈধভাবে অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালনের অভিযোগ করেন।
নুর হোসেন জানান, তাঁর অভিযোগের আলোকে জেলা প্রশাসক তন্ম দাস গত ২৫ এপ্রিল স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচলক মো.মাসুদ হোসেনকে আহŸায়ক করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন। কমিটি গত ১০ জুন জেলা প্রশাসকের কাছে ৯ পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদন দাখিল করে।
ওই প্রতিবেদন ‘২০১৭ সালে ছাত্রী নুরে জান্নাত চতুর্থ শ্রেণিতে তিন বিষয়ে এবং ২০১৮ সালের বার্ষিক পরীক্ষায় পাঁচ বিষয়ে ফেল করার বিষয়টিতে স্পষ্টতই বিভ্রান্তিকর’ বলে মন্তব্য করা হয়। তা ছাড়া একই শ্রেণিতে (চতুর্থ) মো.ফুয়াদ এহসান নামের এক ছাত্র নয় বিষয়ের মধ্যে আটটিতে ফেল করলেও পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি করা হয়। অথচ নুরে জান্নাতকে ভর্তি করা হয়নি বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
অপরদিকে অবৈধভাবে অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালনের অভিযোগের বিষয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘চূড়ান্ত বরখাস্তের আদেশের বিরুদ্ধে অধ্যক্ষের পক্ষে প্রদত্ত আদেশের বিপরীতে দায়ের করা লিভ টু আপিল মঞ্জুর হয়ে সিভিল আপিল মামলা চলমান থাকাবস্থায় এ এইচ এম আবদুল হাই অধ্যক্ষ হিসাবে মাদ্রাসায় যোগদানের আইনগত কোনো সুযোগ নাই’ মতামত দেওয়া হয়।
নুরে জান্নাতের বাবা মো.নুর হোসেন হতাশা ব্যক্ত করে বলেন, আমি জেলা প্রশাসকের কাছে আমার মেয়েকে পড়ালেখায় বাধা দিয়ে শিক্ষার মৌলিক অধিকার হরণের বিরুদ্ধে প্রতিকার চেয়েছিলাম, কিন্তু সেই প্রতিকার পাইনি। আর কয়দিন পর সহপাঠীরা বার্ষিক পরীক্ষা দিতে পারলেও আমার মেয়ের বাড়িতে বসে বসে কান্না ছাড়া কোনো উপায় নেই।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যক্ষ এ এইচ এম আবদুল হাই প্রথম আলোকে বলেন, ওই ছাত্রী একই শ্রেণিতে পরপর দুই বছর ফেল করে। কোনো শ্রেণিতে পুনঃভর্তি হতে ভর্তি ফরম কিনে আবেদন করতে হয়। ওই ছাত্রীর কেউ এ বিষয়ে মাদ্রাসায় যোগাযোগ করেনি। তা ছাড়া জেলা প্রশাসকের তদন্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে মামলা করা হয়েছে। তাই এ বিষয়ে এখন তাঁর কিছু করার নেই বলেও উল্লেখ করেন অধ্যক্ষ আবদুল হাই।
জেলা প্রশাসক তন্ময় দাস এ বিষয়ে বলেন, একজন ছাত্রীর অভিভাবকের অভিযোগের ভিত্তিতে তিনি একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছিলেন। ওই কমিটির প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে মামলা হয়েছে বলে শুনেছেন। তিনি বলেন, এভাবে মাদ্রাসাটির বিভিন্ন বিষয়ে সাত-আটটি মামলা বর্তমানে চলমান রয়েছে। তাই সব পক্ষকে নিয়ে বসে একটি সমাধান বের করার বিষয়ে তিনি চিন্তা করছেন বলেও উল্লেখ করেন। সুত্র : প্রথম আলো 13/11/2019

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Shares