শিরোনাম:
চন্দ্রগঞ্জ বাজার পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা মাঈন উদ্দিন হামীম স্মৃতি ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা ও পুরস্কার বিতরণ চন্দ্রগঞ্জ আইডিয়াল একাডেমিতে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও সুমাইয়া মেমোরিয়াল স্মৃতি বৃত্তি প্রদান লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জে অনুষ্ঠিত হলো শাহআলম চৌধুরী স্মৃতি বৃত্তি পরীক্ষা চন্দ্রগঞ্জে মেধা বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত আলোচনায় ফজলুর রহমান বাবু ও বীনা আক্তারের “তুমি আমার মনের মানুষ” বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব তোফায়েল আহম্মদের মৃত্যুতে সৌদি প্রবাসী বিএনপির দোয়া ও আলোচনা সভা লক্ষ্মীপুরে বীর মুক্তিযোদ্ধা তোফায়েল আহম্মদ পাঠাগার উদ্ধোধন বীর মুক্তিযোদ্ধা তোফায়েল আহম্মেদের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া জিয়া সৈনিকদলের পূর্নাঙ্গ কেন্দ্রীয় কমিটি আনুষ্ঠানিক ঘোষণা

হারানো শিশুদের খুঁজে দিয়ে বাবা-মায়ের মুখে হাসি ফোটালো পুলিশ

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, এপ্রিল ১৫, ২০১৯
  • 250 Time View

প্রতিদিনের খবর ডেস্ক :

একমাত্র সন্তান সামিয়াকে নিয়ে পহেলা বৈশাখের উৎসবে রমনা পার্কে গিয়েছিলেন মা ফাতেমা আক্তার। প্রচণ্ড ভিড়ের মধ্যে হঠাৎ মেয়েকে হারিয়ে ফেলেন তিনি। তারপর হয়ে যান পাগলপ্রায়। চিৎকার করে কান্নাকাটি আর পাগলের মতো মেয়েকে খুঁজতে থাকেন তিনি। কিন্তু এত মানুষের ভিড়ে মেয়েকে ফিরে পাওয়া ছিল প্রায় অসম্ভব। দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা তাকে নিয়ে যান ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কন্ট্রোল রুমের লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড ডেস্কে। সেখান থেকে মেয়েটির বর্ণনা দিয়ে করা হয় মাইকিং। কিছুক্ষণ পরই খুঁজে পাওয়া যায় সামিয়াকে। তারপর মা-মেয়ের চোখে-মুখে আনন্দাশ্রু।
শুধু সামিয়া নয়, আজ পহেলা বৈশাখে এরকম ১৬টি হারানো শিশুকে খুঁজে বের করে বাবা-মায়ের কাছে ফিরিয়ে দিয়ে তাদের মুখের হাসি ফুটিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উদ্যোগে স্থাপিত দুটি লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড সেন্টার। এছাড়াও অসুস্থ হওয়া আরও তিনটি শিশুকে উদ্ধার করে তাদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে ডিএমপি।
পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, বাঙালির সর্বজনীন উৎসব পহেলা বৈশাখে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ, পরিবার-পরিজন, বন্ধু-বান্ধব নিয়ে অংশগ্রহণ করেন। বিশেষ করে রমনা পার্ক, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় থাকে সবচেয়ে বেশি ভিড়। নববর্ষ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানগুলোতে অংশগ্রহণ করতে অনেকেই তাদের সন্তান বা ছোট শিশুদের সঙ্গে নিয়ে যান। তারা জানান, প্রতিবছরই দেখা যায় অভিভাবকরা একটু অসতর্ক থাকলে বা কৌতূহলী প্রবণতা থেকে বাবা-মায়ের কাছ থেকে একটু দূরে গেলেই মানুষের ভিড়ে হারিয়ে যায় এসব শিশু। অনেককে খুঁজে পাওয়া গেলেও কখনও কখনও শিশুরা হারিয়েও যায়। কিংবা তার বাবা-মায়ের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। তখন সন্তানকে হারিয়ে পাগলপ্রায় হয়ে যান তাদের বাবা-মায়েরা। এসব শিশুকে খুঁজে বের করার জন্যই পুলিশের উদ্যোগ লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড সেন্টার। এজন্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও রমনা পার্কের পুলিশ সাব কন্ট্রোল রুমে দুটি লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড সেন্টার করা হয়েছিল। দুই সেন্টার থেকে আজ ১৬ শিশুকে উদ্ধার করে তাদের বাবা-মা ও অভিভাবকের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
বৈশাখী উৎসবে হারানো শিশুকে খুঁজে মায়ের কোলে তুলে দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড সেন্টার।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ডের দায়িত্বে থাকা উপ-পুলিশ কমিশনার আশিকুল হক ভুঁইয়া জানান, তারা হারিয়ে যাওয়া মোট পাঁচটি শিশুকে উদ্ধারের পর তাদের বাবা-মা বা অভিভাবকের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছেন। এরা হলো আনোয়ারুল, শুভ, ফাহিম, আহসান ও জাহিদ। এছাড়া আরও তিনটি শিশু অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাদের উদ্ধার করে দ্রুত ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠিয়েছেন।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) ওবায়দুর রহমান জানান, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও রমনা পার্ক থেকে মোট ৯টি শিশুকে উদ্ধার করে বাবা-মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এরা হলো মুন্নি, রবিউল, মীম, আদনান, সিনহা, তানভীর, মামুন, সাফা ও সোহান।
তিনি জানান, কখনও সন্তানকে হারিয়ে ফেলে তাদের বাবা-মা বা অভিভাবক এসে লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড সেন্টারে জানিয়েছেন আবার কখনও কান্নারত অবস্থায় উদ্ধার হওয়া শিশুকে পাওয়ার পর মাইকিং করে তাদের অভিভাবকদের খুঁজে বের করা হয়েছে।
লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড সেন্টারে দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, ওয়ারি থেকে বাবা গোপালের সঙ্গে আসা আট বছরের শিশু মায়ামনি হারিয়ে গিয়েছিল। কান্নারত অবস্থায় পুলিশ তাকে লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড সেন্টারে নিয়ে মাইকিং করে। সেই মাইকিং শুনে বাবা ছুটে এলে তার হাতে মেয়েকে তুলে দেওয়া হয়। একইভাবে হারিয়ে গিয়েছিল কাকরাইল থেকে রমনা পার্কের বৈশাখী উৎসবে আসা ৮ বছরের শিশু শাহরিয়ার। পরে পুলিশ তার বাবা সাইফুলকে খুঁজে তার হাতে তুলে দেয় শাহরিয়ারকে।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের দায়িত্বে থাকা গণপূর্ত বিভাগের কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম জানান, বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে তিনি উদ্যানের গেটে দুই শিশুকে কাঁদতে দেখে তাদের কান্নার কারণ জিজ্ঞাসা করেন। এ সময় দুই শিশু শুভ ও আনোয়ারুল জানায়, তারা তার চাচার সঙ্গে ঘুরতে এসেছিল। চাচাকে হারিয়ে তারা কাঁদছে। পরে তিনি দুই শিশুকে পুলিশের লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড সেন্টারে নিয়ে যান। সেখানকার কর্মকর্তারা মাইকিং করে তার চাচার হাতে দুই শিশুকে তুলে দেন।
লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড সেন্টারে দায়িত্ব পালনকারী ডিএমপির অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার হাফিজুর রহমান রিয়েল বলেন, ‘যখন হারিয়ে যাওয়া সন্তানকে ফিরে পেয়ে পরম আদরে তার মা বুকে জড়িয়ে ধরেছিলেন, সেই দৃশ্য আসলে বলে বোঝানো যাবে না। এ এক অভূতপূর্ব দৃশ্য। মানবিক কারণেই আমরা প্রতিবছর পহেলা বৈশাখে বা অন্য যে কোনও উৎসবে পুলিশের পক্ষ থেকে এ ধরনের ব্যবস্থাপনা নিয়ে থাকি। সাধারণ মানুষকে সেবা দেওয়াটাই আমাদের কাজ। এটি আমাদের দায়িত্ব।’

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Shares