শিরোনাম:
চন্দ্রগঞ্জ বাজার পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা মাঈন উদ্দিন হামীম স্মৃতি ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা ও পুরস্কার বিতরণ চন্দ্রগঞ্জ আইডিয়াল একাডেমিতে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও সুমাইয়া মেমোরিয়াল স্মৃতি বৃত্তি প্রদান লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জে অনুষ্ঠিত হলো শাহআলম চৌধুরী স্মৃতি বৃত্তি পরীক্ষা চন্দ্রগঞ্জে মেধা বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত আলোচনায় ফজলুর রহমান বাবু ও বীনা আক্তারের “তুমি আমার মনের মানুষ” বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব তোফায়েল আহম্মদের মৃত্যুতে সৌদি প্রবাসী বিএনপির দোয়া ও আলোচনা সভা লক্ষ্মীপুরে বীর মুক্তিযোদ্ধা তোফায়েল আহম্মদ পাঠাগার উদ্ধোধন বীর মুক্তিযোদ্ধা তোফায়েল আহম্মেদের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া জিয়া সৈনিকদলের পূর্নাঙ্গ কেন্দ্রীয় কমিটি আনুষ্ঠানিক ঘোষণা

লক্ষ্মীপুরে গৃহবধুর অর্ধকোটি টাকার সম্পদ জবর দখল

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, জুন ৬, ২০২২
  • 1849 Time View

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধিঃ
লক্ষ্মীপুর শহরের মাদাম শিশুপার্ক সড়কে সেলিনা বেগম নামের এক গৃহ বধুর অর্ধকোটি টাকা মুল্যের জমি জবর দখল করে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়াগেছে। এ জমির পুনঃ দখল পেতে ওই গৃহবধু তার স্বামীকে নিয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরলেও জবরদখলকারিরা ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী হওয়ায় কোন প্রতিকার পাচ্ছেনা।অপর দিকে জবর দখলকারি ও তাদের লালিত সন্ত্রাসীদের প্রাণ নাশের হুমকী ধমকীর
কারণে ওই গৃহ বধু ও তার স্বামী বর্তমানে জীবনের নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছেন বলে জানিয়েছে।

তথ্য অনুসন্ধানে জানাযায়, লক্ষ্মীপুর সদর এলজিইডির সার্ভেয়ার মোঃ শহীদুল ইসলামসহ ৪জন ব্যক্তি লক্ষ্মীপুর শহরের মাদাম পৌর শিশু পার্ক সড়কের পাশের্ব বাঞ্চানগর মৌজায় অবস্থিত জেলা জরিপি ১৩৮৪ নং খতিয়ানভুক্ত ৮০৩৭ নং দাগের ২৬ শতাংশ জমি মুল মালিকদের নিকট থেকে ২০০০ সালে খরিদ সুত্রে মালিক হন। পরবর্তীতে শহীদুল ইসলাম তার মালিকানাধীন সাড়ে ৬ শতাংশ জমি ২০০১ সালে তার স্ত্রী সেলিনা বেগম এর নামে হেবা দলীল মুলে দান করেন। সেলিনা বেগম উক্ত জমি ভোগ দখল করে আসছেন। বিগত ২০০৮ সালে জমা খারিজ খতিয়ান করে নেন এবং সরকারি খাজনাপাতি পরিশোধ সহ উক্ত স্থানের ভুমি ভরাট করে ভাউন্ডারী দেয়াল নির্মাণ করেন। অপর ক্রেতা মোঃ শাহজাহান, খলিলুর রহমান ও তার স্ত্রী নিশাদ রহমান ও তাদের নামে কেনা জমি যথারীতি জমা খারিজ খতিয়ান ও পরবতীতে রিভিশন জরিপে মালিকদের নামে রেকর্ডভুক্ত হয়। মালিকগন খরিদকৃত উক্ত ভুমির উন্নয়ণ
সাধন করে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করে ভোগ দখল করে আসছেন। তারা যথারীতি সরকারি ভুমি কর প্রদান করে যাচ্ছেন। কিন্তু বিগত ২০১৪ সালে গোপনে ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী ও প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি ও মুক্তিযোদ্ধা আবুল বাশার বশির মাষ্টার তার পুত্র ও কন্যাদের
নামে জনৈক খোকন ভুঁইয়া থেকে ৪টি দাগ উল্যেখ করে একটি দলিল সৃজন করে। উক্ত দলিলে ৪টি পৃথক দাগ উল্যেখ থাকলেও সেলিনা বেগমের মালিকানাধীন জমিতে উদ্দেশ্য মুলক ভাবে দখল দেখিয়ে লক্ষ্মীপুর পৌর ভুমি অফিসের সহকারি ভুমি কর্মকর্তা জহির উদ্দিনকে অবৈধ ভাবে ম্যানেজ করে জাল কাগজপত্র সৃজন করে ২০১৯ সালে একটি জমা খারিজ খতিয়ান তৈরী করে। সম্প্রতি আবুল বাশার বশির মাষ্টার তার ছেলে ও তাদের লালিত
ক্যাডার বাহিনী নিয়ে উক্ত জমিতে ঘর তুলে জবর দখল করে নেয়। এ দিকে সেলিনা বেগম তার মালিকানাধীন সাড়ে ৬ শতাংশ জমির রীতিমত ভুমি কর প্রদান করে আসছেন। বিগত ১৪২৮ বাংলা সনের খাজনা পর্যন্ত পরিশোধ রয়েছে। এ ব্যাপারে সেলিনা বেগম নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে ১৪৪ ধারায় একটি মামলা দায়ের করলেও স্থানীয় পৌর ভুমি অফিসার জবরদখরকারিদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে একটি কাল্পনিক প্রতিবেদন প্রদান করলে আদালত মামলাটি খারিজ করে দেন।

এ দিকে সেলিনা বেগম ও তার স্বামী জমির দখল ফিরে পেতে লক্ষ্মীপুর পৌর মেয়র, জেলা প্রশাসক সহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত আবেদন করলেও তারা কোন প্রতিকার পাচ্ছেনা।

একই জমি দুই ব্যক্তির নামে জমা খারিজ ও খাজনা আদায় এবং আদালতে প্রভাবিত হয়ে প্রতিবেদন দেওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে লক্ষ্মীপুর পৌর ভুমি অফিসের সহকারি ভুমি কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন বলেন, আমি সেলিনা বেগমের দখলে থাকার কথা আমার প্রতিবেদনে উল্যেখ করেছি। এই জমির পাশের্ব বশির মাষ্টারের ছেলে সাজ্জাদ গংদের আরো জমি থাকায় এবং বিবাদীদের সরবরাহকৃত কাগজ পত্রে দাগে জমির পরিমাণ বেশী দেখানোর ও তাদের নামে জমা খারিজ থাকার কারণে আমি সেলিনা বেগমের দেড় শতাংশ জমি সাজ্জাদগংদের নামে দেখিয়ে প্রতিবেদন দিয়েছি। একই জমি দুই ব্যক্তির নামে জমা খারিজ ও ভুমি কর আদায় প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি কোন সদোত্তর দিতে পারেননি।

জানতে চাইলে শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি আবুল বাশার বশির মাষ্টারের পুত্র জমির মালিক সাজ্জাদ হোসেন জানান, তারা জমির মালিক খোকন ভুঁইয়া তাদের উক্ত জমি বুঝিয়ে দিয়েছেন। ভুমি অফিস তাদের নামে জমা খারিজ করে দিয়েছেন। তাই তারা তাদের মালিকানাধীন জমিতে ঘর তুলে দখল করে নিয়েছেন। তারা কারো জমি জবর দখল করেননি।
এ দিকে সরোজমিনে গেলে আবুল বাশার বশির মাষ্টারের ছেলে আব্দুল্যাহ আল ফাহাদ মঞ্জু জমির মালিক সেলিনা বেগম ও তার স্বামীকে উক্ত জমির মালিকানা দাবী করে জমিতে গেলে তাদের মেরে লাশ বস্তায় ভরে বাড়িতে পাঠিয়ে দিবে বলে হুমকী প্রদান করে। এ সময় সে উত্তোজিত হয়ে সেলিনা বেগমের স্বামী সদর উপজেলা এলজিইডির সার্ভেয়ার সহিদুল ইসলামকে মোবাইলে ফোন করে হত্যা সহ নানা রকম হুমকী ধমকী ও অশ্লীল ভাষায় গালাগাল এবং সাংবাদিকদের সাথে নানা অশালীন আচরণ করেন।

এ দিকে স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, বসির মাষ্টারের ছেলে আব্দুল্যাহ আল ফাহাদ মঞ্জু তার অনুশারী সন্ত্রাসীদের নিয়ে উক্ত জমিতে নিমার্নাধীন ঘরে রীতিমত মাদকের আড্ডা ও পাহারা দিয়ে চলছেন। তারা প্রভাবশালী ও সন্ত্রাসী প্রকৃতির হওয়ায় কেউ ভয়ে তাদের অন্যায়ের প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছেনা। উক্ত দাগের জমির আরেক মালিক শাহজাহান জানান, তিনিও ভয়ে তার মালিকানাধীন জমিতে বশির মাষ্টার ও তার ছেলেদের হুমকী ধমকীর কারণে ভয়ে যেতে সাহস পাচ্ছেননা।

এ দিকে দখলকৃত জমির মালিক সেলিনা বেগম ও তার স্বামী শহীদুল ইসলাম জানান, জবরদখলকারিদের প্রাণ নাশ সহ নানা হুমকী ধমকীর কারণে তারা আতংকিত অবস্থায় জীবন যাপন করছেন। তারা তাদের জমি উদ্ধারে উর্ধতন কতৃপক্ষের সহযোগীতা কামনা করেছেন।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Shares