নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক অসীম দাসের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করেছে শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে প্রধান শিক্ষক ফখরুল ইসলামের অপসারণের দাবিও জানিয়েছে তারা।
বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) দুপুরে বিদ্যালয়ের শতাধিক শিক্ষার্থী নোয়াখালী–লক্ষ্মীপুর আঞ্চলিক সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল বের করে এবং ঘণ্টাব্যাপী সড়ক অবরোধ করে রাখে। এতে দুই পাশে শতাধিক যানবাহন আটকা পড়ে এবং যাত্রীদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সহকারী শিক্ষক অসীম দাস গত কয়েকদিন ধরে বিদ্যালয়ের একাধিক ছাত্রীকে অশালীনভাবে স্পর্শ ও অশোভন মন্তব্য করে যৌন হয়রানি করে আসছিলেন। বিষয়টি প্রধান শিক্ষক ফখরুল ইসলামকে জানালেও তিনি কোনো ব্যবস্থা নেননি বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। বৃহস্পতিবার নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে হয়রানির পর শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে।
বিক্ষোভ চলাকালে উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ মিছিল শেষে অসীম দাসের বাসায় ভাঙচুর ও আগুন ধরিয়ে দেয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।
খবর পেয়ে বেগমগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জহিরুল ইসলাম, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মীর জুমলা মিঠু এবং বেগমগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
বেগমগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জহিরুল ইসলাম বলেন, ঘটনার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা বিদ্যালয়ে যাই এবং শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলি। অভিযুক্ত শিক্ষক অসীম দাসকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি সভাপতি মীর জুমলা মিঠু বলেন, আমরা বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। কোনোভাবেই শিক্ষক নামে কেউ যদি শিক্ষার্থীদের প্রতি অনৈতিক আচরণ করে, তাকে ছাড় দেওয়া হবে না। স্কুলের ভাবমূর্তি রক্ষায় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফখরুল ইসলাম বলেন, পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে আছে। প্রশাসন ও স্কুল কমিটি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছে। অভিযুক্ত শিক্ষক এখন পলাতক।
এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। পুলিশ জানিয়েছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে এবং পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক রয়েছে।
Leave a Reply