প্রতিদিনের খবর ডেস্ক :
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে অগ্নিকাণ্ডে অর্ধশতাধিক শ্রমিক নিহত হওয়ার ঘটনায় সজীব গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবুল হাসেম ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সজীবসহ ৮ জনকে আটক করা হয়েছে।
শনিবার (১০ জুলাই) হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজের ওই কারখানা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
তিনি বলেন, কারখানার আগুনের ঘটনায় মামলা হবে। তদন্ত করে দোষীদের বিচার হবে। ইতোমধ্যে ৮ জনকে আটক করা হয়েছে। গাফিলতি বিন্দুমাত্র থাকলে কারো ছাড় নেই।
তিনি আরো বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত হৃদয় বিদারক ও মর্মান্তিক। যারা মারা গেছেন তাদের আত্মার মাগফিরাত করছি এবং আশা করছি যারা অসুস্থ তারা ফিরে আসবেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তিনটি তদন্ত কমিটি হয়েছে। তদন্তের পরই বলা যাবে কার দোষ কতটুকু। কিন্তু তদন্তে কারো নির্মাণ ত্রুটি, শ্রমিক পরিচালনায় ত্রুটি বা কেউ যদি সামান্য ভুলও করে থাকেন তবে তাকে ছাড় দেওয়া হবে না। এ সময় শিশুশ্রম নিয়ে প্রশ্ন করলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তদন্তে সেটি বেরিয়ে আসলে অবশ্যই বিচার হবে।
শ্রমিকরা ছাদে তালাবদ্ধ ছিল এমন অভিযোগ সম্পর্কে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তার বক্তব্যের পুনরাবৃত্তি করে বলেন, তদন্তের সামান্যতম ত্রুটি বা গাফিলতি যদি পাওয়া যায় তবে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অপরদিকে কারখানার মালিক বর্তমানে কোথায় রয়েছেন এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা ইতোমধ্যে আটজনকে আটক করেছি। সবাই নজরদারিতে রয়েছে।
এদিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ জায়েদুল আলম জানান, ৩০২ ধারায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। তিনি বলেন, ফায়ার সার্ভিস বলেছে, ভবন নির্মাণে ত্রুটি রয়েছে। ভবনে অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা ছিল না। আমরা মনে করি এখানে ইচ্ছাকৃতভাবে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। আমরা সরাসরি হত্যা মামলা দায়ের করেছি। ইতোমধ্যে মালিক পক্ষ ও ম্যানেজমেন্টের দায়িত্বে থাকা আটজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। যে বা যারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
তিনি আরো বলেন, মরদেহগুলো থেকে ডিএনএর স্যাম্পল নেওয়া হয়েছে। নিখোঁজ যারা আছেন তাদের বাবা-মা, দাদা-দাদি সবার ডিএনএ নমুনা কালেক্ট করেছি। শিগগিরই আমরা নমুনা পরীক্ষা করে মরদেহগুলো হস্তান্তর করতে পারবো।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (০৮ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে উপজেলার কর্ণগোপ এলাকায় অবস্থিত সজীব গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হাসেম ফুড লিমিটেডের কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে ডেমরা, কাঞ্চনসহ ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিট আগুন নেভাতে কাজ করে। ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার ২৯ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে আসে আগুন। তবে এ সময়ের মধ্যে ঝরে গেছে ৫২টি প্রাণ। আহত হয়েছেন অন্তত ৫০ জন।
Leave a Reply