সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪ শিক্ষার্থীর মাথার চুল কাঁচি দিয়ে কেটে লাঞ্ছিত করার ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে ছয়জন ছাত্রের চুল কেটে বিপাকে পড়েছেন স্থানীয় জামায়াত নেতা মঞ্জুরুল কবির। তিনি বামনী ইউনিয়নের হামছাদী কাজির দিঘীরপাড় আলিম মাদ্রাসার শিক্ষক। গত বুধবার ওই মাদ্রাসায় এ ঘটনা ঘটে।
এদিকে ঘটনাটির একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে ঘটনার তদন্ত শুরু করে পুলিশ এবং শুক্রবার রাত ৯টার দিকে ওই শিক্ষককে তার কাজীর দিঘিরপাড় বাড়ি থেকে আটক করেন রায়পুর থানার ওসি আবদুল জলিল। এঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানা যায়।
অভিযুক্ত মঞ্জুরুল কবির স্থানীয় ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামের আমির। ভুক্তভোগীরা একই মাদ্রাসার দশম শ্রেণির ছাত্র।
ন্যাক্কারজনক এই ঘটনায় ছাত্র ও অভিভাবকদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এরপরই সমালোচনার মুখে পড়েন এ জামায়াত নেতা।
মাদ্রাসার দাখিল শ্রেণির শিক্ষার্থী নাজমুল আলম ও ফজলে রাব্বী জানান, বুধবার তাদের ইংরেজি ক্লাস চলছিল। এ সময় হঠাৎ সিনিয়র শিক্ষক মঞ্জুরুল কবির ক্লাসে ঢুকে কাঁচি দিয়ে ছয়জন ছাত্রের মাথার চুল কেটে দেন। ঘটনার পর ছাত্ররা ক্লাস না করে বেরিয়ে যায়। পরবর্তীতে অন্য শিক্ষকদের মধ্যস্থতায় ছাত্ররা তাদের ক্লাসে ফেরে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ছাত্র বলেন, মঞ্জুরুল স্যার আমাদের (ক) শাখার ছয়জনের চুল কেটে দিয়েছেন। কিন্তু (খ) শাখার কারো চুল কাটেননি। আমি মাথা ন্যাড়া করার কারণে চারদিন মাদরাসায় যাইনি। পরে স্যার দাখিল পরীক্ষার ফরম পূরণ করতে দেওয়া হবে না বলে হুমকি দেন।
অভিযুক্ত মঞ্জুরুল কবির ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমি দাখিল শ্রেণির সব ছাত্রকে পরীক্ষার আগের দিন চুল কেটে মাদ্রাসায় আসতে বলেছি। তারা আমার কথা না শোনায় কয়েকজনের চুল কেটে দিয়েছি। তবে কাউকে হুমকি দেইনি।
বামনী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তাফাজ্জল হোসেন মুন্সি বলেন, মাদ্রাসার শিক্ষক মঞ্জুরুল কবির ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামের আমির। তিনি প্রায়ই ছাত্রদের ওপর প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করেন। তার ভয়ে ছাত্র তো দূরের কথা অন্য শিক্ষকরাও নিরুপায়।
রায়পুরের ইউএনও সাবরীন চৌধুরী বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে। সত্যতা পাওয়া গেলে বিধি মোতাবেক ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Leave a Reply