রফিকুল ইসলাম প্রিন্স, কথাসাহিত্যিকঃ
সেসব সোনালি দিনগুলো গাছের শিকড়ের মতো জাপটে থাকে আগাগোড়া। চারদিকে হৈহৈ রই রই ব্যাপার। ইদের আমেজে চারপার উৎসব মুখর হয়ে যেতো তখন। এখনও হয়। ফারাক কেবল বয়সের। সময় মানুষকে অনেক কিছু থেকেই মুক্তি দেয়। যেমন আমায় মুক্তি দিয়েছে শৈশব থেকে। এখনও বাড়ির ছোটো সদস্যের মুখে হাসি দেখলে মনেহয় দিনগুলো শেষ হয়ে যায়নি। এত আধুনিকতার ভীরেও কেটে যায়নি আমেজ। চাঁদ রাতের আলোকসজ্জা, ইদের নামাজ, নামজ শেষেই বেরিয়ে পড়া সালামির খোঁজে। সারাদিন ঘোরাফেরা আর তারপর রাতে তুমুল গল্পজোট। আহা! জীবনের পুরানো পান্ডুলিপি খুলে ধরলেই চোখ জলে ছলছল করে ওঠে।
এইযে এখন দিনগুলো যায়, তারপর কত উৎসব আসে। কই, সে আমেজ তো আর পাইনা। মানসিকতা এখন স্তব্ধ করে রেখেছে কাজের ব্যস্ততায়। এখন আর মাস খানেক ধরে ইদের কেনাকাটা করা হয় না। চাঁদ রাতে বাড়ির মেয়েদের মেহেন্দি উৎসব রটে। আমাদের বাড়িতেও হতো তেমন। আমি সন্ধ্যা থেকে তাদের পাশে বসে উপভোগ করতাম ভীষণ। এখনো ঠিক তেমনটা না হলেও, একেবারেই যে হয় না তা নয়। কিন্তু আমারই আর সময় সুযোগ হয়ে ওঠে না সে সমস্ত কোনাকোনি উৎসব গুলো উপভোগ করা।
সময় সুযোগ হলেও ইচ্ছে করে না ইদের দিনটাকে স্পেশাল ভাবে আয়োজন করতে। নতুন পোষাকে ছোটো বেলায় যে আসক্তি ছিলো তা আর এখন মনকে ছুঁতেই পারে না। কি অদ্ভূত তাইনা? সময় আর বয়স একটা মানুষকে পুরোটাই উল্টে দিতে কিঞ্চিত কার্পন্য করে না কখনো। অথচ, কিছুটা আবেগ রয়ে গেলেও পারতো। তাহলে হয়তো ইদটা আর পাঁচটা দিনের মতো কাটতো না।
Leave a Reply